যশোর নওয়াপাড়া পৌরসভার ময়লা -আবর্জনা ফেলার কোন নির্দিষ্ট জায়গা নেই
ইমাদুল ইসলাম, যশোর জেলা ( প্রতিনিধি )
প্রথম শ্রেণির নওয়াপাড়া পৌরসভার নেই কোন ময়লা-আবর্জনা ফেলার নির্দিষ্ট স্থান। পৌরসভার জন্মলগ্ন থেকে সরকারি পরিত্যক্ত জমিতে ফেলা হয় শহরের সব ময়লা-আবর্জনা। সম্প্রতি সেইসব জমিতে ময়লা-আবর্জনা ফেলার বিষয়ে কর্তৃপক্ষ নিষেধাজ্ঞা জারি করে সাইনবোর্ড লাগিয়েছে। ফলে গত দুই দিনের ময়লা-আবর্জনা শহরজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে। জমে থাকা আবর্জনা থেকে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ তৈরি হচ্ছে।
অপরদিকে ময়লা-আবর্জনা সংগ্রহের কাজে থাকা পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা পড়েছেন বিপাকে। কাজ না থাকায় অলস সময় পার করছেন তারা। পৌর কর্তৃপক্ষ বলছে দ্রুত সময়ের মধ্যে সমস্যার সমাধানে চেষ্টা করা হচ্ছে। সরকারি খাস জমি পাওয়ামাত্র ময়লা-আবর্জনা অপসারণ করা হবে।
সরেজমিনে পৌরসভার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বড়-ছোট বাজারসহ আবাসিক এলাকার ময়লা-আবর্জনা যত্রতত্র ছড়িছে ছিটিয়ে রয়েছে। দুর্গন্ধের কারণে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ তৈরি হয়েছে। নওয়াপাড়া বাজারের ফিরোজ মার্কেটের মালিক আশরাফ হোসেন প্রিন্স বলেন, দোকানিরা প্রতিদিন তাদের দোকানঘর পরিষ্কার করে মার্কেটের সামনে আবর্জনা রেখে দেয়। ভোর বেলা পৌরসভার পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা সেই আবর্জনা গাড়িতে করে নিয়ে যায়। দুইদন ধরে তারা আসছে না। মার্কেটের সামনে জমে থাকা ময়লা-আবর্জনার কারণে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। দ্রুত এ সমস্যার সমাধান জরুরি হয়ে পড়েছে।
নওয়াপাড়া পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, নিজস্ব জমি না থাকায় ময়লা-আবর্জনা ফেলা নিয়ে ব্যাপক সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের রাজঘাট এলাকায় সরকারি পরিত্যক্ত শিল্প হাসপাতালের ভেতরে ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছিল। কিন্তু দুই দিন পূর্বে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পক্ষ থেকে ময়লা-আবর্জনা ফেলার বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। যে কারণে পৌরবাসী সাময়িক সমস্যার মধ্যে পড়েছেন। দ্রুত সময়ের মধ্যে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মিজানুর রহমান বলেন, পৌর কর্তৃপক্ষ স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে ২০০৯ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত রাজঘাট শিল্প হাসপাতালের জমিসহ ভবন লিজ নিয়েছিল। তাদের লিজের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও তারা ময়লা-আবর্জনা ফেলে আসছে। দীর্ঘদিন তারা শহরের সব ময়লা-আবর্জনা হাসপাতাল চত্বরের ভেতরে ও বাইরে স্তূপ করে রেখেছে। একদিকে পরিবেশের যেমন ক্ষতি হচ্ছে অন্য দিকে অস্বাস্থ্যকর দুর্গন্ধের কারণে সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সম্প্রতি ওই জমিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। পৌর কর্তৃপক্ষ নিজস্ব জমিতে ড্যাম্পিং স্টেশন করে ময়লা-আবর্জনা ফেলার ব্যবস্থা করেনি কেন? এতদিন তারা কি করেছে।
তিনি আরো বলেন, অভয়নগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রচুর রোগী আসে। রোগীদের সেবাদান বৃদ্ধির লক্ষ্যে রাজঘাটের শিল্প হাসপাতাল সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এ বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়দেব চক্রবর্তী বলেন, বিষয়টি শুনেছি। পৌর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জনদুর্ভোগ কমাতে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।