বোয়ালমারীতে দুই বিএনপি নেতার উপর হামলার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন
ইকবাল হোসেন লিমন, স্টার্ফ রিপোটার: ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে গোরস্থান কমিটি গঠনের বিরোধে দুই বিএনপি নেতার উপর বর্বরোচিত হামলার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে উপজেলা ও পৌর বিএনপি। বৃহস্পতিবার দুপুরে ফরিদপুরের বোয়ালমারী পৌরসদর বাজারের ওয়াপদার মোড় সংলগ্ন হারুন শপিং কমপ্লেক্সে উপজেলা বিএনপি কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখত বক্তব্য পাঠ করেন উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শামসুদ্দিন মিয়া ঝুনু।
লিখিত বক্তব্য তিনি বলেন- বিএনপি থেকে বারবার বহিষ্কৃত নেতা খন্দকার নাসিরুল ইসলাম নাসির ফরিদপুর-১ আসনের বিএনপির রাজনীতি ধ্বংসের মিশনে নেমেছে। এ অঞ্চলে চিহ্নিত আওয়ামী সন্ত্রাসী বাহিনীকে দলে প্রবেশ করিয়ে দখলদারি, চাঁদাবাজী ও বিএনপির আন্দোলন সংগ্রামে অংশগ্রহণ করা শহীদ জিয়ার আদর্শের সৈনিক, প্রকৃত ত্যাগী
নেতাকর্মীদের উপর বর্বরোচিত হামলা চালিয়ে দলকে দুর্বল করতে আওয়ামী লীগের মিশন বাস্তবায়নের কৌশল অবলম্বন করেছে। স্থানীয় সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের জমি দখল, সরকারী খালবিল দখল, চাঁদাবাজি এখন তার নৈমিত্তিক বিষয়।
সম্প্রতি তিনি মোটা অংকের আর্থিক সুবিধা বাগিয়ে নিয়ে আওয়ামী লীগের একাধিক প্রভাবশালী নেতাকে দলে অনুপ্রবেশ করিয়েছেন। তাদেরই একজনআওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা মো. আব্দুস সালামকে সাতৈর গোরস্থান কমিটিতে সভাপতি করেছেন। এ নিয়ে স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে চরম অসন্তোষ দেখা দেয়। বিষয়টি নিয়ে বিএনপি নেতা সৈয়দ টুটুল প্রতিবাদ করলে গত ১৬ সেপ্টেম্বর সোমবার দুপুরে তাকে ফোন করে সাতৈর বাজারের ব্যবসায়ী ইউনুসের ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠানে ডেকে নেয়। সেখানে আগে থেকেই ওতপেতে থাকা খন্দকার নাসিরের মদদপুষ্ঠ আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী বাহিনী কবির, ইমরান, শাহাজাহান ফকির, নাসিমসহ ২০/২৫ জনের একটি সন্ত্রাসী বাহিনী দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে অতর্কিত নৃশংস হামলা চালায়। এতে মারাত্মক আহত হয় সৈয়দ টুটুল। তার মাথা ও শরীরে নানা স্থানে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। একই ঘটনায় ১৭ সেপ্টেম্বর রাতে সৈয়দ হাবিবুর রহমানের উপর বর্বরোচিত হামলা চালায় একই সন্ত্রাসী বাহিনী । উপর্যুপরি হামলায় হাবিবুর রহমান মাথা, শরীরের নানাস্থান ও পায়ের একটি রগ কেটে এখন সে পঙ্গুত্বের মুখে। সে বর্তমানে বোয়ালমারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। নৃশংস এঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায় উপজেলা ও পৌর বিএনপি। সংবাদ সম্মেলন উপস্থিত ছিলেন হামলার শিকার আহত সৈয়দ টুটুল হোসেন ও সৈয়দ হাবিবুর রহমান।
সৈয়দ টুটুল হোসেন বলেন – খন্দকার নাসিরুল ইসলাম নানা সময় বিভিন্ন দল করেছেন। তিনি জাসদ, জাতীয় পার্টি ও সর্বশেষ বিএনপিতে যোগদান করেন। দলে যোগদান করেও আওয়ামী লীগের নেতাদের সাথে আঁতাত করে বিভিন্ন সময় দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে নির্বাচন করে দলের ভরাডুবি ঘটিয়েছে। আমরা বোয়ালমারীতে বিএনপির শুরু থেকে বিএনপি দলীয় রাজনীতির সাথে জড়িত। সুবিধাবাদী খন্দকার নাসিরুল ইসলামের সাথে রাজনীতি না করায় সে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী বাহিনীকে দলে ভিড়িয়ে তাদের দিয়ে আমাদের উপর হামলা চালিয়েছে। আমি দলের হাইকমান্ডের নিকট আবেদন করছি শহীদ জিয়ার আদর্শের প্রকৃত বিএনপি নেতাকর্মীদের রক্ষায় এই বহুরূপী দুর্নীতিবাজ, দখলদার নেতা খন্দকার নাসিরুল ইসলামকে দল থেকে বহিষ্কার ও তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।
বোয়ালমারী উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক ও পৌর কাউন্সিলর মিনাজুর রহমান লিপনের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলন বক্তারা জানান – এ বিষয়ে বোয়ালমারী থানায় সৈয়দ সাইফুল ইসলাম বাদি হয়ে কামারহাটি গ্রামের মো. ইসমাইলের ছেলে মো. ইমরান, একই গ্রামের মো.কুদ্দুসের ছেলে সাতৈর ইউনিয়ন কৃষকলীগের ৯ নং ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক মো. কবির, মো. আজিজারের ছেলে মো. সুমন, রুস্তম আলী মাতুব্বরের ছেলে মো. শহীদুল ইসলাম, হানিফ ফকিরের ছেলে, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহাজাহান ফকিরসহ ১১ জনের নামে ও অজ্ঞাত ০৮/১০ জনের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা করা হয়েছে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মজিবুর রহমান বাবু, বোয়ালমারী উপজেলা যুবদলের আহবায়ক ও পৌর কাউন্সিলর মিনাজুর রহমান লিপন, বিএনপি নেতা মফিজুর কাদের খান মিল্টন, মো. এনায়েত হোসেন, সাতৈর ইউনিয়ন বিএনপির সহসভাপতি সৈয়দ শফিকুল আজম মাকুল মেম্বার, বিএনপি নেতা মো. কামাল আহমেদ, উপজেলা জাসাসের সভাপতি মো. শাহিন আনোয়ার প্রমুখ।