1. admin@dainikbangladeshpotro.com : admin :
বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৪৮ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
বরিশালে গণধর্ষণের পর হত্যা, দুইজনের ফাঁসির আদেশ গণহত্যাকারী ফ্যাসিস্ট হাসিনার বিচারের দাবীতে বাকেরগঞ্জ বিএনপি’র গনসমাবেশ অনুষ্ঠিত কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলায় সন্ত্রাসীদের চুরির আঘাতে সাবেক রেল ইন্জিনিয়ারি আঃ আউয়াল সাহেব কে হত্যা করার চেষ্টা, মির্জাগঞ্জে, উপজেলা বিএনপির সংবাদ সম্মেলন। উজিরপুরে সাংবাদিকদের সঙ্গে ইউএনও’র মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত বিরল রোগে আক্রান্ত সন্তানকে নিয়ে পথে পথে ঘুরছেন বাবা বাকেরগঞ্জে পরিমাপে কম দেয়ায় হাওলাদার ফিলিং স্টেশনকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা! বরিশালে দৈনিক সংবাদ সারাবেলা পত্রিকার প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালিত বাকেরগঞ্জে স্বামীর বিরুদ্ধে স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগ! বাকেরগঞ্জে সাবেক মেয়র লোকমান ও ৪ কাউন্সিলরসহ দুই শতাধিক নেতাকর্মীর নামে মামলা!

ঝিকরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শুধু নেই আর নেই

ইমাদুল ইসলাম, যশোর জেলা ( প্রতিনিধি )
  • প্রকাশের সময় : রবিবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • ৩৮ বার পঠিত

ঝিকরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শুধু নেই আর নেই

ইমাদুল ইসলাম, যশোর জেলা ( প্রতিনিধি )

যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শুধু নেই আর নেই। ডাক্তার নেই, কর্মচারী নেই, ঔষধ নেই, জেনারেটর থাকলেও তেল কেনার পয়সা নেই, রোগীদের বসার ব্যবস্থা নেই, মাথার উপর ফ্যান নেই, ব্যবহার উপযোগী বাথরুম নেই, পর্যাপ্ত সুপেয় পানির ব্যবস্থা নেই। এতসব নেই এর কারণে সাড়ে ৩ লক্ষ জনগণের চিকিৎসার সর্বোচ্চ আশ্রয়স্থল ঝিকরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা সেবার মান নিয়ে অসন্তুষ্ট রুগী এবং তার স্বজনরা। এতে করে প্রতিদিনই ক্ষোভ বাড়ছে স্থানীয় জনগণের মধ্যে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, ২০১২ সালে ঝিকরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৫০ শয্যায় উন্নীত হলেও এই শয্যার বিপরীতে কখনই ডাক্তার বা কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া হয়নি। ১২ জন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের বিপরীতে আছেন ৫ জন এবং ১৫ জন মেডিকেল অফিসারের বিপরীতে আছেন মাত্র ২জন। ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণির ৪৯ টি পদের বিপরীতে কর্মচারী আছেন মাত্র ২২ জন। ডাক্তার আর কর্মচারী সংকটে হাসপাতালে আগত রুগীরা তাদের কাঙ্ক্ষিত সেবা পাচ্ছে না। দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট কেটে তারপর লম্বা সময় অপেক্ষা করেও ডাক্তার দেখাতে পারছেনা অনেকে। প্রচন্ড গরমে সবচেয়ে বেশি কষ্ট পাচ্ছেন সন্তান সম্ভবা মায়েরা। দীর্ঘ অপেক্ষার পর ডাক্তারের কাছে পৌঁছাতে পারলেও তাদের প্রেসার বা ওজনটাও মাপা হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন অনেকে। ঝিকরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একটি জেনারটর থাকলেও জ্বালানি তেল কেনার বরাদ্দ না থাকায় সেটাও চালু করা সম্ভব হয় না। ফলে এই প্রচন্ড তাপদাহের মধ্যে বিদ্যুৎ চলে গেলে ফ্যান তো দুরের কথা একটা আলোরও ব্যবস্থা থাকছে না। ভ্যাপসা গরম আর অন্ধকারে চরম দুরাবস্থা বিরাজ করে রুগীদের ওয়ার্ড গুলোতে। রাতের বেলা মোবাইলের লাইট জ্বেলে জরুরীভাবে চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়। এছাড়াও রুগীদের সাথে কর্তব্যরত নার্সদের দুর্ব্যবহারের অভিযোগও করেন হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রুগীরা।

সরজমিন পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের টিকিট কাউন্টারের সামনে শ’খানেক রোগীর লাইন। অনেকে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে কষ্ট হয়ে যাওয়ায় মেঝেতেই বসে পড়েছেন। সাড়ে নয়টা বাজলেও টিকিট কাউন্টারে কোন লোক আসেনি। সকল ডাক্তারদের চেম্বারই ফাঁকা। সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে অনেকেই তাদের অভিযোগ জানাতে থাকেন। চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা বলেন হাসপাতালে পর্যাপ্ত ডাক্তার নেই, যারা আছেন তারাও সময়মত আসেননা আবার সময়ের আগেই বের হয়ে যান, হাসপাতালে আগত রুগী ও তাদের স্বজনদের বসার পর্যাপ্ত জায়গা নেই, মাথার উপর প্রয়োজনীয় সংখ্যক ফ্যান নেই, বিদ্যুৎ চলে গেলে আলো জ্বলেনা, বাথরুম গুলো নোংরা এবং দুর্গন্ধময়, সেখানে কোনো সুস্থ মানুষের পক্ষে যাওয়া সম্ভব নয়, খাবার পানিরও সুব্যবস্থা নেই। হাসপাতাল চত্বর এবং এর আশেপাশের এলাকাও অপরিচ্ছন্ন। এছাড়াও আছে মেডিকেল রিপ্রেজেনটেটিভদের যন্ত্রণা। ডাক্তাররা রোগী দেখার চেয়ে মেডিকেল রিপ্রেজেটেটিভদের সাথে সময় দিতেই পছন্দ করেন বেশি।

জানা যায় উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পন কর্মকর্তা প্রশাসনিক কাজে ব্যস্ত থাকেন। আবাসিক মেডিকেল অফিসার এর উপর ভর করেই চলছে এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি। আউটডোরে প্রতিদিন চারশ থেকে সাড়ে চারশ রুগী আসলেও দেখেন মাত্র দুই থেকে তিনজন ডাক্তার। ফলে অনেকেই ডাক্তার না দেখাতে পেরে ফিরে যাচ্ছেন। বেলা ২:০০ টার পর আবার এখানে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা ফি দিয়ে ডাক্তার দেখাতে হয়। ফলে অনেকেই টাকার অভাবে ডাক্তার দেখাতে পারেন না। ডায়রিয়া এবং জ্বরের রোগী ছাড়া ভর্তি হয় না বলে অনেকে অভিযোগ করেন। কিছু হলেই যশোরে রেফার করার অভিযোগ আছে অনেকের। সব মিলিয়ে ঝিকরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এখানকার জনগণের কাঙ্খিত সেবা দিতে সম্পুর্ন ব্যার্থ।

ঝিকরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার রশিদুল আলম বলেন, বারবার চাহিদা দেওয়া স্বত্বেও এখানে ডাক্তার এবং কর্মচারী কোনোটাই দেওয়া হচ্ছে না। ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হলেও এখানে সবসময় ৮০ থেকে ৯০ জন রুগী ভর্তি থাকে। অল্প সংখ্যক জনবল দিয়ে এতসংখ্যক রুগীকে স্বাস্থ্য সেবা দেওয়া সম্ভব নয়। তবুও আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। দশটা বাজলেও ডাক্তাররা রুগী দেখতে শুরু করেননা এর কারণ হিসেবে প্রতিদিন সকালে দৈনিক কর্মসূচি ঠিক করার জন্য মিটিং এবং ক্লিনারদের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা করতে দেরি হওয়াকে দায়ী করেন তিনি। ডিউটি টাইমে মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভদের সময় দেয়ার ব্যাপারেও ডাক্তারদের সতর্ক করবেন বলে তিনি জানান।

যশোর জেলা সিভিল সার্জন ডাক্তার মোঃ মাহমুদুর রহমান বলেন, সম্প্রতি বাইরে সংযুক্ত থাকা দুইজন চিকিৎসককে ঝিকরগাছা হাসপাতালে আবার ফেরত পাঠানো হয়েছে। যদিও পূর্বের দিনের মতই তিনজন ডাক্তারকে আউটডোরে সেবা দিতে দেখা যায়। কর্মচারী সংকটের কথাও মন্ত্রণালয়কে জানানো হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন তারা দ্রুতই পদক্ষেপ নেবেন। অন্যান্য বিষয়গুলো উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার সাথে আলাপ করার পরামর্শ দেন তিনি।

Facebook Comments Box
এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ

ফেসবুকে আমরা

© স্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৩ দৈনিক বাংলাদেশ পত্র
প্রযুক্তি সহায়তায় Shakil IT Park